Saturday, October 10, 2009

Milad Shareef & Qiam Shareef Are Khas Sunnat


মীলাদ শরীফ-কিয়াম শরীফ নূরে মুজাস্‌‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যামানাতেই ছিল।
মীলাদ শব্দের অর্থ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত করা ও তাঁর প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা। অতএব, তা আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ সবারই সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
আমরা যেভাবে মজলিস করে মীলাদ মাহফিল করে থাকি তা খোদ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের যামানাতেই ছিল।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা তাঁর নিজ গৃহে সমবেত ছাহাবীগণকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর প্রশংসা তথা তাছবীহ তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর (ছলাত-সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপসি'ত হলেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন, সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে অর্থাৎ
ক্বিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন) তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব। (সুবুলুল হুদা ফি মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী, পৃষ্ঠা ৩৫৫)
আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত আবূ আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর গৃহে উপসি'ত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীনে তাশরীফ এনেছেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে কিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন।)
তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহমতের দরজা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফিরিস্তাগণ তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের মত এরূপ করবেন। তোমার মত সেও নাজাত ও ফযীলত লাভ করবে।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযির, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয়ের দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বয়ং মীলাদ শরীফ পাঠ করতেন এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তা’যীম বা সম্মানার্থে কিয়াম করতেন। বর্তমানে যে সুনির্দিষ্ট তর্জ-তরীকায় মীলাদ মাহফিল হয় তাতে নূরে মুজাস্‌‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত সংক্ষিপ্তভাবে করা হয়ে থাকে যা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।












Noor-E-Mujassam,Habibullah,Saiyidul Mursalin,Imamul Mursalin,Khwatamun Nabiyyin, Huzur Pak Swallallahu Alaihi Wa Sallam- A Short Description Of Mubarak Life In The World


১.
নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দুনিয়াবী হায়াত মুবারকের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।
পবিত্র মক্কা শরীফে
১। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দ রজব মাসের প্রথম জুমুয়ার রাতে (লাইলাতুর রাগাইব) নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা হযরত আমিনা আলাইহাস্‌ সালাম-এর রেহেম শরীফে তাশরীফ আনেন।
২। হযরত খাজা আব্দুল্লাহ্‌ আলাইহিস্‌ সালাম-এর বিছাল শরীফের ৬ মাস পরে, ৫৭০ খ্রীঃ ২৯শে আগস্ট পারস্যের সুবিখ্যাত সম্রাট নওশেরওয়াঁর রাজত্বের চতুর্বিংশ বৎসরে আছ্‌হাবে ফীল্‌-এর ঘটনার ৫৫ দিন পরে, পবিত্র রবিউল আউয়াল শরীফের ১২ই শরীফ তারিখে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি বা সোমবার শরীফে (সর্বাধিক মশহুর মত) সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পূর্বে, ইমামুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ্‌ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দুনিয়াতে তাশ্‌রীফ আনেন।
৩। হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস্‌ সালাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর তৃতীয় দিনে তাঁকে মক্কা শরীফে নিয়ে যান এবং নাম মুবারক রাখেন ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এর পূর্বে কারো নাম ‘মুহম্মদ’ ছিল না।
৪। বিলাদত শরীফ-এর পর তাঁর সম্মানিতা আম্মা আমিনা আলাইহাস্‌ সালাম-এর দুগ্ধ পান করেন।
৫। দু’দিন পর হযরত ছূওয়াইবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর দুগ্ধ পান করেন।
৬। অতঃপর ভাগ্যবতী হযরত হালিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তাঁকে নিয়ে যান। ২ বৎসর প্রতিপালনের পর মক্কা শরীফে নিয়ে আসেন। কিন্তু মহামারি থাকার কারণে আবার নিয়ে যান এবং মোট ৬ বৎসর হযরত হালিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর ঘরে ছিলেন। এর মধ্যে একবার সিনা মুবারক চাক করা হয়।
৭। ৬ বৎসর বয়স মুবারকেই তাঁর সম্মানিতা আম্মা হযরত আমিনা আলাইহাস্‌ সালাম বিছাল শরীফ লাভ করেন।
৮। এরপর পিতামহ হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস্‌ সালাম-এর তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হন। ৮ বৎসর বয়স মুবারকে পিতামহ বিছাল লাভ করলে, পিতৃব্য আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হন।
৯। ১০ বৎসর বয়স মুবারকে ছাগল চড়ায়েছেন।
১০। ১২ বৎসর বয়স মুবারকে সিরিয়ায় বাণিজ্যার্থে গমন। এ সময় বিভিন্ন আশ্চর্য আশ্চর্য ঘটনা সংঘটিত হয় এবং বোহাইরা নামক পাদ্রী নবী হওয়ার ভবিষ্যত বাণী করেন এবং সাক্ষ্য দেন।
১১। ১৩/১৪ বৎসর বয়স মুবারকে দ্বিতীয়বার সিনা মুবারক চাক করা হয়।
১২। বয়স মুবারক যখন ১৪/১৫, তখন ‘হরবুল ফুজ্জারে’ পিতৃব্যদের সাথে গমন করেন।
১৩। ৫৯৫ খিস্টাব্দে ১৪ বৎসর বয়স মুবারকে ‘হিলফুল ফুজুল’ গঠন করেন।
১৪। ১৭ বৎসর বয়স মুবারকে পিতৃব্য হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সঙ্গে বাণিজ্যার্থে ইয়েমেন যান।
১৫। ২০ বৎসর বয়স মুবারকে বিভিন্ন রকম স্বপ্ব দেখতেন এবং ফিরিস্তাদের আওয়াজ শ্রবণ করতেন। আবু তালিব স্বপ্বের ঘটনা শুনে মনে করতো কোন অশুভ আছর হয়েছে, তাই বৈদ্য ডেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করলে বৈদ্য বলেছিল, আপনার ভাতিজার কোন রোগ হয়নি বা আছর করেনি, বরং তাঁর শিরার বিভিন্ন লক্ষণে মনে হচ্ছে, ইনি একজন মহান ব্যক্তিত্ব হবেন।
১৬। ২৪ বৎসর বয়স মুবারক হতে হযরত খাদিজাতুল কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর ব্যবসা পরিচালনা করেন।
১৭। ২৫ বৎসর বয়স মুবারকে হযরত খাদিজাতুল কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা শাদী মুবারকের প্রস্তাব দেন এবং শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হয়। তখন হযরত খাদিজাতুল কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর বয়স মুবারক ছিল ৪০ বৎসর। শাদী মুবারকের মোহ্‌রানা ছিল ৫০০ দেরহাম (রৌপ্য মুদ্রা)।
১৮। ২৫ হতে ৩৫ বৎসর বয়স মুবারক পর্যন্ত বিশেষভাবে জনকল্যাণে নিয়োজিত থাকেন ও বিপন্ন মানুষকে আর্থিক সাহায্য করেন।
১৯। ৩৫ বৎসর বয়স মুবারকে পবিত্র ক্বাবা শরীফ সংস্কারে বিভিন্ন গোত্রের কলহ দূর করেন এবং হজরে আস্‌ওয়াদ নিয়ে যে ফিৎনা হয়, সেটাও সমাধা করেন।
২০। ৩৫ থেকে ৪০ বৎসর বয়স মুবারক পর্যন্ত হিরা গুহায় বিশেষভাবে ইবাদতে মশগুল হন। তিনি মাঝে মাঝে খাওয়ার জন্য বাড়ী আসতেন কিন্তু অধিকাংশ সময় হযরত খাদিজা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা খাবার দিয়ে আসতেন।
২১। ৪০ বৎসর বয়স মুবারকে তৃতীয়বার সিনা মুবারক চাক করা হয়, ওহী নাযিল হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত ঘোষণা করা হয়।
২২। নুবুওওয়াত প্রাপ্তির তৃতীয় বৎসর পর্যন্ত ভিতরে ভিতরে ইসলাম প্রচার করেন।
২৩। ৪৩ বৎসর বয়স মুবারকে প্রকাশ্যে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানান। আবু লাহাব তখন বিরোধিতা করেছিল, ফলে ‘সুরা লাহাব’ নাযিল হয়।
২৪। নুবুওওয়াতের ৫ম বৎসরে কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে আল্লাহ পাক-এর নির্দেশে ১৬ জন, কোন কোন মতে ১৫ জন নারী-পুরুষ নিয়ে আবিসিনিয়ায় প্রথম হিজরত করেন।
২৫। নুবুওওয়াতের ৬ষ্ট বৎসরে হযরত হামযা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইসলাম গ্রহণ করেন। তখন হতে প্রকাশ্যে ক্বাবা শরীফে নামাজ পড়া শুরু হয়। তখন মুসলমানের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৪০/৫৭ জন।
২৬। নুবুওওয়াতের ৭ম বৎসরে চন্দ্র দ্বিখন্ডিত করেন।
২৭। নুবুওওয়াতের ৭ম হতে ১০ম বৎসর পর্যন্ত শিয়াবে আবু তালিবে অবস্থান করেছিলেন। এর দুই মাস পর আবু তালিবের মৃত্যু হয়, তার তিন মাস পর হযরত খাদিজাতুল কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-বিছাল শরীফ লাভ করেন। এ দশম বৎসরকে বলা হয়, ‘আমুল হুযন’ অর্থাৎ শোকের বৎসর।
২৮। নুবুওওয়াতের এ ১০ম বছরের শেষের দিকে হযরত খাদিজা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহার পর, হযরত সাওদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং হযরত আয়েশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (বয়স মুবারক ছিল ৬ বৎসর)-এর সাথে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হয়।
২৯। নুবুওওয়াতের এ দশম বৎসরেই তায়েফ গমন করেন ও প্রত্যাবর্তন করেন। এ সময় জ্বীন সম্প্রদায় ইসলাম গ্রহণ করে।
৩০। নুবুওওয়াতের দশম বৎসরের শেষে মদীনা শরীফ থেকে লোকজন আগমন করেন ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
৩১। নুবুওওয়াতের একাদশ বৎসরে প্রথম আকাবা হয়।
৩৪২ নুবুওওয়াতের একাদশ বৎসরে স্বশরীরে মি’রাজ শরীফ সংঘঠিত হয়।
৩৩। নুবুওওয়াতের দ্বাদশ বৎসরেই হযরত মাসআব ইবনে উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-কে দ্বীনের তালিমের জন্য মদীনা শরীফে পাঠান।
৩৪। নুবুওওয়াতের ত্রয়োদশ বৎসরে বাইয়াতে উকবা সংঘঠিত হয়। এ বছরেই মুসলমানগণ মদীনা শরীফে হিজরত করেন। এ বৎসরেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে নিয়ে হিজরত করেন এবং ছাওর গুহায় অবস্থান করেন। এর মধ্যে বিভিন্ন ঘটনা সংঘঠিত হয়।

পবিত্র মদীনা শরীফে
প্রথম হিজরীঃ হিজরতের সময় পথিমধ্যে বরিদা বিন হাসিব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করতে এসে নিজেই ৭০জন বাহিনীসহ ইসলাম গ্রহণ করে। অতঃপর কুবায় ১৪দিন অবস'ান করেন এবং সেখানে মসজিদ নির্মাণ করেন। মদীনা শরীফ গমনকালে বতনে ওয়াদি নামক স'ানে ১০০ জন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকে নিয়ে জুময়ার নামাজ আদায় করেন এবং সেখানে মসজিদ নির্মাণ করেন। মদীনা শরীফে প্রবেশ করে ৭/৮ মাস হযরত আবু আইউব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর গৃহে অবস্থান করেন। এ সময় মসজিদে নববী ও উম্মুল মু’মিনীনগণের কক্ষসমূহ নির্মাণ করা হয়। এরপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখান হতে নিজ অবস্থানে যান। এ সকল কক্ষের প্রত্যেকটি দৈর্ঘ্য ১০ হাত, প্রস্থ ৬ হাত এবং উঁচু একজন মানুষ দাঁড়িয়ে হাত উঁচু করে স্পর্শ করতে পারতো। এরপর আযানের প্রবর্তন হয়।
দ্বিতীয় হিজরীঃ ক্বিবলা পরিবর্তন, শাবান মাসে ক্বিবলা পরিবর্তনের আয়াত শরীফ নাযিল হয়। রমজান মাসে বদর যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। এ যুদ্ধে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন। আর কাফিরদের সংখ্যা এক হাজার। এ বৎসর যিলহজ্ব মাসে হযরত ফাতেমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৎসরই রোজা ফরজ হয়, ফিৎরা দেয়া ওয়াজিব হয়, জামায়াতের সাথে ঈদুল ফিৎরের নামায শুরু হয়।
তৃতীয় হিজরীঃ ওহুদ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়, হযরত হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জন্ম গ্রহণ করেন। হযরত হাফসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাথে শাদী মোবারক সুসম্পন্ন হয়। উত্তরাধিকার আইন জারি হয়। এ বৎসর মুশরিক নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম করা হয়। হযরত জয়নব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর সাথে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হয় এ বৎসরই।
চতুর্থ হিজরীঃ হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বিলাদত লাভ করেন। এ বৎসরই মদ্য পান হারাম হয়, চোরের হাত কাটার দন্ডবিধি জারী হয়। হযরত যায়েদ ইবনে ছাবেত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে হিব্রু ভাষা শিক্ষার জন্য প্রেরণ। রাজির যুদ্ধ, বীরে মাউনা যুদ্ধ, বদরের দ্বিতীয় যুদ্ধ, সারিয়ায়ে বনী ছালমা, সারিয়ায়ে ইবনে উনাইছ ইত্যাদি সংঘটিত হয়। হযরত উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর সাথে এ বৎসরই শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হয়।
পঞ্চম হিজরীঃ এ বৎসর মহিলাদের জন্য পর্দা ও তৎসংক্রান্ত অন্যান্য বিধান চালু হয়। যিনার শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত জারী হয়। হদ্‌ কায়েম-এর বিধান জারী হয়, তায়াম্মুমের বিধান এ বৎসরই জারী হয়। এ বৎসরই দওমাতুল জান্দালের যুদ্ধ, বনু কুরায়জার যুদ্ধ, পরিখার যুদ্ধ ইত্যাদি সংঘটিত হয়।
ষষ্ট হিজরীঃ হুদাইবিয়ার সন্ধি, এস্তেসকার নামায, জাতুরিকার যুদ্ধ, বনু লাহিয়ান যুদ্ধ বিভিন্ন দেশের বাদশাদের নিকট দূত প্রেরণ, বাদশা নাজ্জাসির নিকট দূত প্রেরণ, হেরাকিয়াসের নিকট দূত প্রেরণ, বাইয়াতে রিদওয়ান, হযরত উম্মে হাবিবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাথে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হয়।
সপ্তম হিজরীঃ হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত আমর ইবনে আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ইসলাম গ্রহণ। নখর (হিংস্র) বিশিষ্ট পাখী খাওয়া নিষিদ্ধ, হিংস্র জন্তু খাওয়া হারাম, গাদা ও খ"চর খাওয়া হারাম, মু’তা বিবাহ হারাম, স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিণিময়ে তদপেক্ষা বেশী স্বর্ণ ও রৌপ্য গ্রহণ করা হারাম হওয়ার বিধান জারী হয়। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ বৎসরই বিষ পান করানোর চেষ্টা করা হয়। এ বৎসরই উম্‌রাতুল কাজা আদায় করেন, হযরত মায়মুনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ও হযরত সুফিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর সাথে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন করেন।
অষ্টম হিজরীঃ মক্কা শরীফ বিজয়, মু’তার যুদ্ধ, হুনাইনের যুদ্ধ, মিম্বর নির্মাণ, তায়েফের যুদ্ধ, আওতাসের যুদ্ধ, সুদ হারাম হওয়ার বিধান এ বৎসরই জারী হয়।
নবম হিজরীঃ যাকাত ফরজ হয়, হজ্ব ফরজ হয়, তাবুকের যুদ্ধ, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর হজ্ব যাত্রা (আমিরে হজ্ব) এবং বিভিন্ন কবিলার লোকদের দলে দলে ইসলাম গ্রহণ। মুনাফিকরা এ বৎসর মসজিদে যেরার তৈরী করে।
দশম হিজরীঃ হাজ্জাতুল বিদা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হজ্ব আদায়, বনু হারিছ ও বনু কায়াবদের ইসলাম গ্রহণ, কতিপয় খ্রীষ্টানদের সাথে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথোপকথন, নবম ও দশম হিজরীতে লোকগরা দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করেন। এ সমস্ত গোত্রের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০টি। এভাবে অল্পসময়ের মধ্যেই সমুদয় আরববাসী, অগ্নি উপাসক, খ্রীষ্টান ও ইহুদীরা স্বেচ্ছায় আগ্রহের সাথে ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নুবুওওয়াত লাভের তিন বৎসর পর হতে প্রায় ৬ষ্ট হিজরী পর্যন্ত সুদীর্ঘ ১৬টি বৎসর স্বীয় জাতি, আত্মীয়-স্বজন, বর্হিশত্রু কতর্"ক আক্রমন সত্বেও, পৃথিবীর বুকে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আরবের বিভিন্ন সম্প্রদায়কে ও পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী জাতিকে দ্বীনের পরম বন্দনে আবদ্ধ করে তাদের মধ্যে ঐক্যের বীজ বপন করেন। আরবদের অধর্ম, অনাচার তাঁরই মহিমাময় মহান চারিত্রিক মাধুর্যে ও ব্যবহারে চিরকালের জন্য বিলুপ্ত হয়।
একাদশ হিজরীঃ মুসাইলামাতুল কাজ্জাবের নবী দাবী ও তাকে নিস্তানাবুদ করা, এ বৎসর ২৬শে সফর সোমবার উসামা ইবনে যাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নেতৃত্বে ওবনা নামক স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সৈন্যগণ তৈরী হচ্ছিলেন কিন্তু ২৯শে সফর বুধবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তথাপী তিনি সৈন্য বাহিনী পাঠিয়ে দিলেন।
২৯শে সফর বুধবার সকালে অসুস্থ হলেন, ঐ দিনই বিকালে একটু সুস্থ হলেন, এতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ খুশি হয়ে যাঁর যাঁর সামর্থ অনুযায়ী আল্লাহ্‌ পাক-এর রাস্তায় দান-খয়রাত করলেন আর এ দিনটিই সারাবিশ্বের মুসলমানগণ ‘আখিরী চাহার শোম্বা’ হিসেবে পালন করেন।
ঐদিন বিকালে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন, এ অসুস্থতা ৯ই রবিউল আউয়াল শরীফ পর্যন্ত চললো। ৯ই রবিউল আউয়াল শরীফ অসুস'তা আরো বৃদ্ধি পেল, ফলে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে যেতে পারেননি। এ সময় ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ পর্যন্ত মোট ১৬ কি ১৭ ওয়াক্ত নামাযের ইমামতি করেন, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
অতঃপর ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ রোজ সোমবার শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীমি) আল্লাহ্‌ পাক-এর আহবানে সাড়া দিলেন এবং পর্দার অন্তরে চলে গেলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জিসিম মুবারক মঙ্গলবার পর্যন্ত মাটির উপরেই ছিল।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দাফন মুবারক সম্পন্ন করা হয়। ৬৩ বৎসর বয়স মুবারকে আল্লাহ্‌ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্‌ পাক-এর সান্নিধ্যে চলে যান।More Info




             


Download Al-Baiyinaat Shareef

Friday, October 9, 2009

To Be The Complete Muslim & Complete Human We have To Do Qalbi Zikir From Haqqani-Rabbani Murshid Qeebla

আলীমুল হাকীম আল্লাহ পাক-এর জন্যই সমস্ত প্রশংসা। উনার পেয়ারা হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বেশুমার দুরূদ ও সালাম।
আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগীর জন্য মানুষকে যমীনে প্রেরণ করেছেন। তবে আক্ষরিক অর্থে শুধুই ইবাদত-বন্দেগীর জন্যে নয়। শুধুই ইবাদত বন্দেগী হলে ফেরেশ্‌তারাই যথেষ্ট ছিল। সে প্রেক্ষিতে খোদা তায়ালার মুহব্বত-মারিফত হাছিলই জ্বিন-ইনসান প্রেরণের মূল উদ্দেশ্য বলে সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম একমত।
আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে মানুষের প্রতি খোদা পাক-এর বিশেষ দানটি হলো- তার অন্তর, তার দিল বা তার ক্বলব। যা মূলতঃ খোদা পাক-এর মুহব্বত-মারিফত সন্নিবেশ করার স্থল। “মু’মিনের ক্বলব আল্লাহ পাক-এর আরশ” হাদীছ শরীফ-এর এই অভিব্যক্তি তারই প্রমাণ।
মাখলুক হিসেবে মহান মালিকের জাত পাক-এর পরিচয় স্বীয় ক্বলবে অনুধাবন, উনার ছিফতসমূহের সম্যক জ্ঞান আহরণই মানব ক্বলবের কাঙ্খিত কামিয়াবী, বাঞ্ছিত বিকাশ। এ ধরনের বিকশিত, নূরানী ক্বলবসম্পন্ন ব্যক্তিই আল্লাহ পাক-এর একান্ত অনুগত। উনারাই আরিফ। উনারাই আলিম। তাদের শানেই ইরশাদ হয়েছে, “সাবধান! আলিমরাই আল্লাহ পাককে সবচেয়ে বেশি ভয় করে।” যোগ্যতার মাপকাঠিতে উনারাই উলিল-আমর।
বলাবাহুল্য, আজ মুসলিম সমাজের আমলের যে করুণ অবস্থা তা কেবল হতাশাজনকই নয় বরং গভীর শঙ্কামূলক। গান-বাজনা, সিনেমা, টিভি, ভিসিআরসহ হাজারো অশ্লীল আর অনৈসলামিক কাজই বর্তমানে মানুষের মনের মূল খোরাক হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এসব থেকে ফিরে আসার জন্য সাধারণ উলামাদের পুনঃ পুন আহবান অরণ্যে রোদনে পরিণত হচ্ছে। মুলতঃ ক্বলব সংশোধন তথা ইল্‌মে তাছাউফ অর্জনেই রয়েছে এর সমাধান।
প্রসঙ্গতঃ ক্বলবী যিকিরই এ ইল্‌মের প্রথম সোপান। ক্বলবসহ আরো নয় লতিফা, যথা- রূহ, ছির, খফি, আখফা, নফছ, আব, আতেশ, খাক, বাদ, মোট দশটি লতিফায়ই যখন যিকির জারী হয়, তখন মাথার প্রতিটি চুল থেকে আরম্ভ করে শরীরের সর্বাংশে আল্লাহ আল্লাহ যিকির জারী হয়ে যায়।
অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, মানুষের পাপ তার পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ত।
বলাবাহুল্য, খাহেশাত আর নফছানিয়াত সম্বলিত প্রবৃত্তি প্রচলিত পাপাচারে লিপ্ত হতে সদাই উন্মুখ থাকে। কিন্তু ক্বলবী যিকিরের মাধ্যমে নফছের এই কুপ্রবৃত্তির আমূল পরিবর্তন সম্ভব। জবরদস্তিমূলকভাবে নয়, স্বতঃস্ফুর্তরূপেই নফছের ইসলাহ্‌‌ তথা ইতমিনান লাভ সম্ভব। ইরশাদ হয়েছে, “সাবধান আল্লাহ পাক-এর যিকির দ্বারাই দিল ইতমিনান লাভ করে।”
উল্লেখ্য, এ সমাধানটি কেবল আম মুসলমানগণের জন্যই নয় বরং মাওলানা, মুফ্‌‌তী, তথা শায়খুল হাদীছদের জন্যও আরো গভীরভাবে প্রযোজ্য। কারণ ক্বল্‌বী যিকির জারী হওয়া ব্যতিরেকে শুধু ইল্‌ম দ্বারা কেউ ফায়দা হাছিল করতে পারে না। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “ক্বিয়ামতের দিন সর্বাপেক্ষা কঠিন শাস্তি ভোগ করবে ঐ আলিম যে তার ইল্‌‌ম দ্বারা ফায়দা হাছিল করতে পারেনি।”
মূলতঃ এরা নিজেদের হিদায়েতের ব্যাপারেই পুরো অযোগ্য। এদের নেতৃত্বে, এদের কর্মসূচিতে উম্মাহ্‌্‌র গৌরব পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা নিছক বাতুলতা মাত্র।
এরা শায়খুল হাদীছ, মাহিউদ্দিন, মাওলানা, খতীব, পীর, আমীর, মুফতী ইত্যাদির আবরণে থাকলেও আসলে এদের অন্তরে ক্বল্‌বী যিকির আদৌ জারী নেই।
আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা ঐ ব্যক্তির অনুসরণ করো না যার কাজগুলো শরীয়তের খিলাফ হওয়ায়, নফছের অনুগামী থাকায়, তার ক্বলব যিকির থেকে গাফিল রয়েছে।” (সূরা কাহাফ/৯৮)
স্মর্তব্য, কেবল ব্যক্তিগত ইসলাহ্‌ই নয়, আল্লাহ পাক-এর মুহব্বত-মা’রিফত লাভসহ তাঁর সন'ষ্টির জন্য খিলাফত আলা মিনহাজিন্‌্‌ নুবুওওয়াহ্‌্‌র কাজ করার ক্ষেত্রেও ক্বলবী যিকিরের সমৃদ্ধতাই মূল আঞ্জাম।
মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ তথা মুজাদ্দিদে আ’যম-এর নেক ছোহবতের মাধ্যমে খুব সহজেই ক্বল্‌বী যিকির তথা হাক্বীক্বী সুলতানুল আযকারসহ খিলাফত আলা মিনহাজিন্‌‌ নুবুওয়ার নিয়ামত নছীব করুন। (আমীন)More Info

We Get The Rwahmat Of Allah Pak If We Achieve The Sohobot(Company) Of Awliaye Kiram Rwahmatullahi Alaihim

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্‌ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বান্দা ও উম্মত তথা কুল-কায়িনাতের জন্য যেরূপ রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত, নাজাত ইত্যাদি লাভের কারণ তদ্রুপ উনার বিছাল শরীফ-এর পর উনার যারা খাছ প্রতিনিধি, নায়িব ও ওয়ারিছ যামানার মহান মুজাদ্দিদগণ তাঁরাও কুল-কায়িনাতের জন্য রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত, নাজাত ইত্যাদি লাভের কারণ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ওলীআল্লাহগণের যমীনে আগমন ও অবস্থান আমভাবেই তো যমীনবাসীর জন্য রহমতস্বরূপই তবে উনাদের এমন কতক বিশেষ মুহূর্ত বা সময় রয়েছে যে সময়ে উনাদের ছোহবত ও খিদমতকারীগণ আরো বেশি পরিমাণে রহমত লাভ করে থাকেন। ফলে তাদের জন্য আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নৈকট্য লাভ নিশ্চিত হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ওলীআল্লাহগণের সেই বিশেষ মুহূর্তগুলির মধ্যে একটি হলো উনাদের বিবাহ-শাদী মুবারকের মুহূর্ত। যা মূলতঃ আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশে ও অনুসরণের নিমিত্তে সম্পাদিত হয়ে থাকে। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক দাতা আর নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বণ্টনকারী। এছাড়াও নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন রহমতুল্লিল আলামীন।
নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিছাল মুবারকের পর সেই নিয়ামত, রহমত বণ্টন করে থাকেন যামানার মুজাদ্দিদগণ। এ ধারাবাহিকতা ক্বিয়ামত পর্যন্ত চলতেই থাকবে। মুজাদ্দিদগণের আহলে বাইতগণকেও তৈরি করা হয় বিশেষভাবে মানুষকে নিয়ামত পৌঁছানোর লক্ষ্যে; যা মূলতঃ খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মহান আল্লাহ পাক বলেন, “আপনার আহলে বাইতকে আমি পবিত্র থেকে পবিত্রতম করে সৃষ্টি করেছি।” এই আয়াত শরীফ-এর পূর্ণ মিছদাক হচ্ছেন যামানার মুজাদ্দিগণের আহাল-ইয়ালগণ। মূলতঃ যামানার মুজাদ্দিদ-এর আহলে বাইতগণের যমীনে উপস্থিতি এবং উনাদের জীবন মুবারকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার কারণ মূলতঃ সেই সময়ের যমীনবাসীকে নিয়ামত, রহমত, সাকীনা, ইলম-আমল, সমঝ দানের লক্ষ্যে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর শাদী মুবারক হয় স্বয়ং আল্লাহ পাক-এর নির্দেশে। উম্মতের পক্ষে এর সকল কারণ কোনদিন অনুধাবন করা সম্ভব নয়। কিন্তু যতটুকু মানুষ উপলব্ধি করতে পারে তা হচ্ছে- নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পর ওহীর ইলম ব্যতীত সকল ইলম মানুষ শিখতে পেরেছে উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর কাছ থেকে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মুজাদ্দিদগণের সকল কাজের নেপথ্যে থাকে গভীর হিকমত; যা সাধারণের পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত অনুযায়ী সকল আওলিয়া কিরামগণের সমগ্র জীবন রহমতপূর্ণ তবে বিশেষ কিছু দিন- বিলাদত মুবারক, শাদী মুবারক, বিছাল মুবারক এছাড়াও আরও কিছু বিশেষ দিন রহমতের দিন যেদিন অসংখ্য অগণিত রহমত নাযিল করা হয়, মানুষকে ক্ষমা করা হয়, নাজাত দেয়া হয়। মানুষ যার কমই উপলব্ধি করে। কারণ মহান আল্লাহ পাক বলেন, মানুষকে অল্প ইলম দেয়া হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বর্ণিত রয়েছে, ইমামুল আইম্মাহ হযরত ফরিদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দরবার শরীফ-এর লঙ্গরখানার এক খাদিম তিনি একবার বাজার-সদায় আনার জন্য বাজারে গেলেন এবং বাজারে গিয়ে দেখলেন, হযরত ফরিদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খালাতো ভাই আল্লাহ পাক-এর ওলী হযরত বাহাউদ্দীন জাকারিয়া মুলতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ঘোড়ার পিঠে চড়ে বাজারের অলিতে-গলিতে ঘুরছেন। তা দেখে খাদিম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ পাক-এর ওলী! আপনাকে তো সাধারণতঃ বাজারে দেখা যায় না। কিন্তু আজ বাজারে আসার কী কারণ? আল্লাহ পাক-এর ওলী বললেন যে, আজ আমার প্রতি আল্লাহ পাক ইলহাম করে জানিয়েছেন, হে বাহাউদ্দীন জাকারিয়া মুলতানী! আজ সারা দিন আপনাকে যারা দেখবে, আপনার সাথে মুছাফাহা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে জান্নাত দান করবো। সুবহানাল্লাহ!
এটা শুনে খাদিম কিছু সময় উনার ছোহবতে ব্যয় করলেন। ফলে উনি দেরিতে সদায় নিয়ে দরবারে উপস্থিত হলেন উনার দেরিতে উপস্থিত হওয়া দেখে হযরত ফরিদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে ডেকে বললেন হে খাদিম! বাজার থেকে আসতে দেরি হলো কেন? খাদিম বিনীত স্বরে ক্ষমা চাইলেন অতঃপর বললেন, হুযূর! আজকে আমার একটা খোশ নছীব হয়েছে, শায়খ জানতে চাইলেন, কি খোশ নছীব হলো তোমার? খাদিম বললেন, আপনার যিনি খালাতো ভাই হযরত বাহাউদ্দীন জাকারিয়া মুলতানী রহমুতল্লাহি আলাইহি উনাকে আল্লাহ পাক ইলহাম করেছেন যে, আজকে যারা উনাকে দেখবে তাদেরকে ক্ষমা করে জান্নাত দান করবেন। তাই উনাকে দেখার আমার সৌভাগ্য হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উদাহরণ হিসেবে বলেন, নবী-রসূলণের আগমন রহমতের কারণেই হয়ে থাকে তথাপি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম-এর উম্মতের জন্য যেদিন খাঞ্জা ভরে খাবার নাযিল করা হয় সেদিনটিকে তা’যীম-তাকরীম না করলে আল্লাহ পাক ভয়ানক শাস্তি দিবেন বলে ইরশাদ করেন। অর্থাৎ সেই দিনটি ছিল বিশেষভাবে সম্মানিত এবং রহমতপূর্ণ দিন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী কালামুল্লাহ শরীফ-এর আয়াতে কারীমা উল্লেখ করে বলেন, আল্লাহ পাক-এর রহমত ওলীআল্লাহগণের নিকটবর্তী। শুধু তাই নয়, যারা আল্লাহ পাক-এর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা, মাহবুব ওলী উনাদের জীবনের বিশেষ দিনগুলোতেও আল্লাহ পাক অশেষ নিয়ামত, রহমত, সাকীনা নাযিল করেন। সেই দিনটিকে যারা পান, যারা তা’যীম-তাকরীম করেন, যারা উপস্থিত হন তাদের উপরও রহমত, সাকীনা নাযিল করেন। মূলত নাজাতের উপলক্ষ হয়। তাই বলা হয়, “রহমতে খোদা বাহানা মি জুইয়াদ” অর্থাৎ আল্লাহ পাক বান্দাকে ক্ষমা করার জন্য ওসীলা তালাশ করেন। তাই আমরা দেখতে পাই যে, পূর্ববর্তী অনেক ওলীআল্লাহগণকে বিশেষ বিশেষ দিন ইলহাম-ইলকা করা হয়েছে সেদিন সেই ওলীআল্লাহকে যিনি দেখবেন, তা’যীম-তাকরীম করবেন তাদের ক্ষমা করা হবে, নাজাত দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মূলতঃ ওলীআল্লাহগণ মানুষকে জান্নাতী করার লক্ষ্যে, নাজাত দেবার লক্ষ্যে অসংখ্য জাল বিস্তার করেন যা মানুষ কমই উপলব্ধি করে। -০-More info